বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসে। ও তখন প্রেসিডেন্সি কলেজের বাংলা অনার্সের ছাত্র। আমিও বাংলা অনার্স, মৌলানা আজাদে। ওর চেয়ে বয়সে বড় আমি। আমার এক বন্ধু, ভবতোষ সাহা, প্রেসিডেন্সির কলেজ স্টুডেন্টস ইউনিয়নের জেনারাল সেক্রেটারি ছিল। ভবতোষের সঙ্গে আমার প্রায়শই দেখা হত কফি হাউসে, প্রেসিডেন্সিতে ও ছিল বুদ্ধদেবের সিনিয়র। একদিন, ভবতোষই কফি হাউসে আমার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল বুদ্ধদেবের। বলল, ‘আমার মতোই ও বাংলা অনার্স নিয়ে পড়ছে, ওর নাম বুদ্ধদেব'। কফি হাউসে বুদ্ধদেবরা বসত রাস্তার ধারে, মানে কলেজ স্ট্রিটের ধারের দিকটায়, ওদিকের একটা টেবল বাঁধা-ধরা ছিল ওদের প্রায়। আমি বসতাম কাউন্টারের দিকে। কাউন্টারের পাশে, দ্বিতীয় টেবলে।
তার পর, বুদ্ধদেবকে আরও কাছাকাছি দেখলাম ইউনিভার্সিটিতে এসে। ও তখন নানারকম কাজকর্ম করছে, বক্তব্য রাখছে এদিক-ওদিক। শৈবাল মিত্রর সঙ্গে ওর ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে, তা মূলত সাহিত্যর প্রতি বুদ্ধদেবের অনুরাগ থেকেই। শৈবালের সঙ্গে সাহিত্য নিয়ে চলত ওর কথাবার্তা, আলোচনা। শৈবাল ওর চেয়ে এক বছরের সিনিয়র, সিক্সথ ইয়ারের ছাত্র তখন। বুদ্ধদেব ফিফ্থ ইয়ারে। শৈবালের সঙ্গে আমারও পরিচয় হয় পরে, কলকাতা জেলার ছাত্র ফেডারেশন রিঅর্গানাইজড হল যখন। শৈবাল হল প্রেসিডেন্ট, আমি হলাম জেনারাল সেক্রেটারি।
ইউনিভার্সিটিতে ইউনিয়ন ইলেকশনে দাঁড়িয়েছিল বুদ্ধদেব। জয়লাভও করেছিল। এখানে একটা তথ্য দিই, অনেকের তা অজানা থাকতে পারে—বুদ্ধদেবের সঙ্গে ইউনিভার্সিটিতে একই সেকশনে পড়ত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী। বি সেকশন ছিল ওদের। সে-সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ছাত্র ছিল বাংলা বিভাগে। এ বি সি, তিনটি সেকশন ছিল। এত ইউনিভার্সিটি তো হয়নি তখন। তাই বাংলা-পড়া সমস্ত ছাত্র এসে ভর্তি হত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েই।
This story is from the August 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the August 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
কবিতার খাতা
দিন শেষ হয়ে যায়। অন্ধকার নেমে আসে আকাশ থেকে। কিন্তু রোজকার মতো ঝলমলিয়ে ওঠে না তাঁর পাড়া। দোকান-বাজার। শব্দ ওঠে জেনারেটরের। বড় বড় আলো পড়ে ধ্বংসস্তূপের ওপর। যেন সেটাই মঞ্চ।
কলের গাড়ি
এক দিন আবিষ্কার হল অগ্ন্যাশয়ে বাসা বেঁধেছে কর্কট ব্যাধি, অন্তিম পর্যায়। পারিবারিক আবহাওয়ায় দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিল। রোগশয্যায় শুয়ে সবই টের পায় শান্তিলাল। এক দিন হীরালাল সামনে এসে দাঁড়ায়।
উপেনবাবুর মেয়ে
গোকুলপিঠে খেতে খেতে ছেলেবেলার স্মৃতি জাগিয়ে তোলে, যখন শীতের সকালে মায়ের হাতে বানানো গরম গরম পিঠে ছিল সবচেয়ে বড় সুখ।
ভালবাসার গল্প
বাদামি চুলের এলা কাঁদছিল। কিন্তু অমল যেন দেখতে পাচ্ছিল বাসবকাকার মুখ। দেখতে পাচ্ছিল আবছায়া একটা ঘর। আর তার মধ্যে ছোট্ট একটা পুঁটলির মতো পড়ে আছে ওর অসহায় বাবা।
তিনি নক্ষত্র হতে জানতেন
জাকির হুসেন, তবলার অতুলনীয় জাদুকর, যাঁর স্পর্শে তবলা খুঁজে পেয়েছিল নতুন ভাষা। তাঁর প্রতিভা ও ক্যারিশমা আজও সঙ্গীতজগতে এক আলোকবর্তিকা।
সুখলালের কিস্সা
সন্ধের ভিজিটিং আওয়ারে সুখলাল দেখেছিল, ফিমেল ওয়ার্ডের আঠাশ নম্বর বেডে সাদা কাপড়ে ঢাকা একটা দেহ। মন মানতে চাইছিল না। এখনও বারবার মনে হয়, ফুলমণি বলেছিল, আজ কোথাও যেয়ো না।
১৯৬৪
শৈশবের সেই যাত্রার মধ্যে মধ্যে মিশে ছিল রোমাঞ্চ; গোয়ালন্দে গাদার মাছের কাঁটা গলায় বিঁধে যাওয়ার পর দলা করে মাখা শুকনো ভাত মুখে পুরে গিলে দেওয়ার ভিতর থেকেও আনন্দই জেগে উঠেছিল সেবার।
রক্ষক
আরিয়ানাকে নিয়ে চলে গেছে লুকাস। একা বসে আছে রাফায়েল। ভাবছে, আজ যদি ওর নিজের সন্তান বেঁচে থাকত, তবে তো কুড়ি বছর বয়স হত তার। সে হয়তো কোনও ইউনিভার্সিটিতে আন্ডার গ্র্যাড করত এখন।
ফুলের তোড়া
বাবুই মায়ের দিকে বিষণ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল, “মা, তুমি তো রোজ দুটো খবরের কাগজ আদ্যোপান্ত পড়ো। বাবা সারা বিশ্বের খবর রাখে। একটি মেয়ে রাজনীতি করছে, এ কি খুবই বিস্ময়কর?”
সমাজের শিকড়ে
মানুষ যে ভাবে ৯ অগস্টের পর একটা সমাজে সন্নিবিষ্ট হতে পেরেছিল, তার পিছনে ছিল হৃদয়ের জোরালো টান।