ফুলকি, গৌরকিশোর ঘোষের ট্রিলজির শেষ পর্ব প্রতিবেশী-র মুখ্য ফু চরিত্র, প্রশ্ন করেছিল তাঁর তোয়াব চাচাকে — দেশটা কি পিঁপড়ের বাসা? পিঁপড়ের বাসা ভাঙলে, পিঁপড়েরা ছড়িয়ে পড়ে। দেশ ভাঙলে মানুষেরা। দেশটা তবে কী?
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রয়াণ বাংলাকে কতখানি নিঃস্ব করেছিল তা গৌরকিশোর তাঁর হৃদয় নিংড়োনো উপাখ্যানে লিখেছিলেন। তার পর দীর্ঘকাল বাংলা ভাষায় দেশবন্ধুকে নিয়ে উল্লেখযোগ্য চর্চাই হয়নি। বস্তুত জাতীয় আন্দোলনে দেশবন্ধুর অবদান, কোন রাজনৈতিক বিচক্ষণতায় তিনি বাংলার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সমগ্র বাঙালির কাছে সর্বমান্য নেতা হয়ে উঠেছিলেন, সাহিত্যের আঙ্গিকে তার কিছু বিবরণ রেখেছেন একমাত্র গৌরকিশোর ঘোষ। আবুল মনসুর আহমদের মতো দেশবন্ধুর অনুগামীরা কিছু স্মৃতিচারণ করেছেন। এবং সেখানেই আমরা থেমে গেছিলাম। রাজনীতিবিদ দেশবন্ধুর চেয়ে সাহিত্যিক দেশবন্ধুকে তুলে ধরতেই আমরা বেশি ব্যস্ত ছিলাম। তাই নারায়ণ পত্রিকার সম্পাদক দেশবন্ধু এবং তাঁর সম্পাদিত ও নিজের লেখা—এই বৃত্তেই আবদ্ধ ছিল আমাদের চিত্তরঞ্জন-চর্চা। তার বাইরে সেকালের স্মৃতিচারণগুলির সঙ্কলনের পাশাপাশি এত দিন পরে হাতে এল একটি নির্মোহ মূল্যায়ন সেমন্তী ঘোষ এবং অনিকেত দে-র সম্পাদনায়, দেশবন্ধু: সমকালে কালান্তরে। এই বইটির আগে পাঠকের জন্য গ্রন্থাকারে আর তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না।
সম্পাদকদ্বয় একটি ঐতিহাসিক কাজ করেছেন। আজকের রাজনীতির ধারা প্রবাহে আমাদের কাছে সত্যিই স্বপ্নলোকের বাসিন্দা মনে হয় দেশবন্ধুকে। অনেককেই দেখেছি দার্জিলিংয়ে স্টেপ অ্যাসাইড-এর সামনে দাঁড়িয়ে নীরব অশ্রুমোচন করতে। কারণ জানতে চাইলে, সকলের কাছ থেকেই পেয়েছি একটিই উত্তর: দেশবন্ধুর অকালপ্রয়াণ না ঘটলে রাজনীতির বোড়ের চালে হিন্দু-মুসলমানের সম্পর্ক আজ এই জায়গাতে আসতেই পারত না।
This story is from the September 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the September 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
কবিতার খাতা
দিন শেষ হয়ে যায়। অন্ধকার নেমে আসে আকাশ থেকে। কিন্তু রোজকার মতো ঝলমলিয়ে ওঠে না তাঁর পাড়া। দোকান-বাজার। শব্দ ওঠে জেনারেটরের। বড় বড় আলো পড়ে ধ্বংসস্তূপের ওপর। যেন সেটাই মঞ্চ।
কলের গাড়ি
এক দিন আবিষ্কার হল অগ্ন্যাশয়ে বাসা বেঁধেছে কর্কট ব্যাধি, অন্তিম পর্যায়। পারিবারিক আবহাওয়ায় দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিল। রোগশয্যায় শুয়ে সবই টের পায় শান্তিলাল। এক দিন হীরালাল সামনে এসে দাঁড়ায়।
উপেনবাবুর মেয়ে
গোকুলপিঠে খেতে খেতে ছেলেবেলার স্মৃতি জাগিয়ে তোলে, যখন শীতের সকালে মায়ের হাতে বানানো গরম গরম পিঠে ছিল সবচেয়ে বড় সুখ।
ভালবাসার গল্প
বাদামি চুলের এলা কাঁদছিল। কিন্তু অমল যেন দেখতে পাচ্ছিল বাসবকাকার মুখ। দেখতে পাচ্ছিল আবছায়া একটা ঘর। আর তার মধ্যে ছোট্ট একটা পুঁটলির মতো পড়ে আছে ওর অসহায় বাবা।
তিনি নক্ষত্র হতে জানতেন
জাকির হুসেন, তবলার অতুলনীয় জাদুকর, যাঁর স্পর্শে তবলা খুঁজে পেয়েছিল নতুন ভাষা। তাঁর প্রতিভা ও ক্যারিশমা আজও সঙ্গীতজগতে এক আলোকবর্তিকা।
সুখলালের কিস্সা
সন্ধের ভিজিটিং আওয়ারে সুখলাল দেখেছিল, ফিমেল ওয়ার্ডের আঠাশ নম্বর বেডে সাদা কাপড়ে ঢাকা একটা দেহ। মন মানতে চাইছিল না। এখনও বারবার মনে হয়, ফুলমণি বলেছিল, আজ কোথাও যেয়ো না।
১৯৬৪
শৈশবের সেই যাত্রার মধ্যে মধ্যে মিশে ছিল রোমাঞ্চ; গোয়ালন্দে গাদার মাছের কাঁটা গলায় বিঁধে যাওয়ার পর দলা করে মাখা শুকনো ভাত মুখে পুরে গিলে দেওয়ার ভিতর থেকেও আনন্দই জেগে উঠেছিল সেবার।
রক্ষক
আরিয়ানাকে নিয়ে চলে গেছে লুকাস। একা বসে আছে রাফায়েল। ভাবছে, আজ যদি ওর নিজের সন্তান বেঁচে থাকত, তবে তো কুড়ি বছর বয়স হত তার। সে হয়তো কোনও ইউনিভার্সিটিতে আন্ডার গ্র্যাড করত এখন।
ফুলের তোড়া
বাবুই মায়ের দিকে বিষণ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল, “মা, তুমি তো রোজ দুটো খবরের কাগজ আদ্যোপান্ত পড়ো। বাবা সারা বিশ্বের খবর রাখে। একটি মেয়ে রাজনীতি করছে, এ কি খুবই বিস্ময়কর?”
সমাজের শিকড়ে
মানুষ যে ভাবে ৯ অগস্টের পর একটা সমাজে সন্নিবিষ্ট হতে পেরেছিল, তার পিছনে ছিল হৃদয়ের জোরালো টান।