সামনে এসে ডোরবেলের সুইচ অন করতে গিয়ে হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে একজোড়া মহিলা জুতো দেখে এক মুহূর্ত কী যেন ভেবে সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নিল। সামান্য সময়। বেলটা বেজে উঠল— আমি পথ ভোলা এক পথিক এসেছি.....
দরজা খুলে স্মৃতিকণাদেবী বললেন, “কী রে, ওরকম হাঁপাচ্ছিস যে!” রুহানি ঘরে ঢুকে ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, “কে এসেছে মা?” “ওই তো...” “কে?” “তুই চিনবি কি?” স্মৃতিকণা যেন একটু জোর করেই প্রসঙ্গটা এখানেই থামিয়ে দিলেন। বললেন, “ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।”
রুহানি ধপ করে সোফার উপরে বসে পড়ল। স্মৃতিকণা এক মুহূর্ত না-দাঁড়িয়ে কিচেনে ঢুকলেন। আজ ইউনিভার্সিটি থেকে যে কথাটা মনের ভিতরে গুছিয়ে এনেছিল মাকে জানাবে বলে, কথাটা বলা হল না । রুহানির মনে হল, মা যেন তাকে কিছু লুকোচ্ছে। ও সোফা থেকে উঠে ভিতরের ঘরে ঢুকল। নিজের ঘরে ঢুকে ব্যাগ রেখে অন্য দিন ওয়াশ রুমে ঢুকে যায়, আজ যেন ইচ্ছা করেই মায়ের ঘরে এল। স্মৃতিকণা সে সময়ে কিচেনে এটা-সেটা নিয়ে ব্যস্ত রাখছিলেন নিজেকে। যেন ইচ্ছা করেই রুহানির কাছ থেকে আড়াল করতে চাইছিলেন। অন্য দিন রুহানি এলে কত কথা জানতে চান, “এত দেরি হল কেন? ঠিকমতো বাস পেয়েছিলিস তো যাওয়ার সময়ে? আজ সব ক্লাস হয়েছে? মোম, জয়িতা, রেশমিরা এসেছিল?”
স্যর কী বললেন, কবে যেতে হবে প্রোজেক্টের কাজে ইত্যাদি হাজারো প্রশ্ন যেন শেষ হতেই চায় না।
মাঝে মাঝে রুহানি বিরক্ত হয়ে বলে, “এত কথা তোমার জানতে ইচ্ছা করে? আমি চলে গেলে তুমি কি সারাটা দিন মনে মনে গুছিয়ে রাখো, ফিরলে এক এক করে সব জিজ্ঞেস করবে? উঃ, আর পারি না তোমাকে নিয়ে। ” কথাগুলো বলে রুহানি একটা তৃপ্তির শ্বাস ছাড়ে। মায়েরা বুঝি এমনই হয়। সারা দিন ওকে নিয়েই কেটে যায় মায়ের।
রুহানি খুব মজা পায় মায়ের সঙ্গে খুনসুটি করে। কখনও আদরে আহ্লাদে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে, কখনও বুকের ভিতরে মুখ নিয়ে ওর মনের কথাগুলো অকপটে বলতে থাকে।
This story is from the November 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the November 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
কবিতার খাতা
দিন শেষ হয়ে যায়। অন্ধকার নেমে আসে আকাশ থেকে। কিন্তু রোজকার মতো ঝলমলিয়ে ওঠে না তাঁর পাড়া। দোকান-বাজার। শব্দ ওঠে জেনারেটরের। বড় বড় আলো পড়ে ধ্বংসস্তূপের ওপর। যেন সেটাই মঞ্চ।
কলের গাড়ি
এক দিন আবিষ্কার হল অগ্ন্যাশয়ে বাসা বেঁধেছে কর্কট ব্যাধি, অন্তিম পর্যায়। পারিবারিক আবহাওয়ায় দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিল। রোগশয্যায় শুয়ে সবই টের পায় শান্তিলাল। এক দিন হীরালাল সামনে এসে দাঁড়ায়।
উপেনবাবুর মেয়ে
গোকুলপিঠে খেতে খেতে ছেলেবেলার স্মৃতি জাগিয়ে তোলে, যখন শীতের সকালে মায়ের হাতে বানানো গরম গরম পিঠে ছিল সবচেয়ে বড় সুখ।
ভালবাসার গল্প
বাদামি চুলের এলা কাঁদছিল। কিন্তু অমল যেন দেখতে পাচ্ছিল বাসবকাকার মুখ। দেখতে পাচ্ছিল আবছায়া একটা ঘর। আর তার মধ্যে ছোট্ট একটা পুঁটলির মতো পড়ে আছে ওর অসহায় বাবা।
তিনি নক্ষত্র হতে জানতেন
জাকির হুসেন, তবলার অতুলনীয় জাদুকর, যাঁর স্পর্শে তবলা খুঁজে পেয়েছিল নতুন ভাষা। তাঁর প্রতিভা ও ক্যারিশমা আজও সঙ্গীতজগতে এক আলোকবর্তিকা।
সুখলালের কিস্সা
সন্ধের ভিজিটিং আওয়ারে সুখলাল দেখেছিল, ফিমেল ওয়ার্ডের আঠাশ নম্বর বেডে সাদা কাপড়ে ঢাকা একটা দেহ। মন মানতে চাইছিল না। এখনও বারবার মনে হয়, ফুলমণি বলেছিল, আজ কোথাও যেয়ো না।
১৯৬৪
শৈশবের সেই যাত্রার মধ্যে মধ্যে মিশে ছিল রোমাঞ্চ; গোয়ালন্দে গাদার মাছের কাঁটা গলায় বিঁধে যাওয়ার পর দলা করে মাখা শুকনো ভাত মুখে পুরে গিলে দেওয়ার ভিতর থেকেও আনন্দই জেগে উঠেছিল সেবার।
রক্ষক
আরিয়ানাকে নিয়ে চলে গেছে লুকাস। একা বসে আছে রাফায়েল। ভাবছে, আজ যদি ওর নিজের সন্তান বেঁচে থাকত, তবে তো কুড়ি বছর বয়স হত তার। সে হয়তো কোনও ইউনিভার্সিটিতে আন্ডার গ্র্যাড করত এখন।
ফুলের তোড়া
বাবুই মায়ের দিকে বিষণ্ণ চোখে তাকিয়ে বলল, “মা, তুমি তো রোজ দুটো খবরের কাগজ আদ্যোপান্ত পড়ো। বাবা সারা বিশ্বের খবর রাখে। একটি মেয়ে রাজনীতি করছে, এ কি খুবই বিস্ময়কর?”
সমাজের শিকড়ে
মানুষ যে ভাবে ৯ অগস্টের পর একটা সমাজে সন্নিবিষ্ট হতে পেরেছিল, তার পিছনে ছিল হৃদয়ের জোরালো টান।