যমজ সন্তান সামলাবেন কী করে?

একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর! যমজ সন্তান মানুষ করা মুখের কথা নয়! সমবয়সি দুই সন্তানদের বড় করার নানা চ্যালেঞ্জ ও তা সামলানোর উপায় বাতলালেন প্যারেন্টিং এক্সপার্ট পায়েল ঘোষ।

প্রা বছরখানেক আগে ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছিল দুই যমজ বানের ভিডিও। হামা দেওয়া, একসঙ্গে খেলাধুলা করার পাশে ঘর লণ্ডভণ্ড করাতেই সমান উৎসাহী তারা। মা-বাবা সামলে রাখার চেষ্টা করলেও সময় পেলেই দুই খুদে একে অপরের চুল ধরে টানত। ফলস্বরূপ চিৎকার, কান্নাকাটি, মারপিট! একদিন তাদের মা রেগে গিয়ে দু’জনেরই চুল কেটে মাথা সাফ করে দেন। ফলে ন্যাড়া মাথায় কেউই আর কারও চুল ধরে টানতে পারছে না! এমন সহজ সমাধান ও খুদেদের নাজেহাল হতে দেখে নেটিজেনরা আমোদ পেলেও যমজ সন্তানদের মানুষ করা প্রকৃতই এক ঝক্কির বিষয়! খুব ভালো অভিভাবক না হলে বা ‘প্যারেন্টিং সেন্স’ তুখোড় না হলে যমজ সন্তানদের সমান গুরুত্ব দিয়ে মানুষ করা যায় না। তাই একটি শিশুর অভিভাবক হওয়া ও যমজ শিশুর অভিভাবক হওয়ার মধ্যে বেশ অনেকখানি তফাত রয়েছে। কারণ এখানে সব শ্রমই দ্বিগুণ!

এখন বেশিরভাগই ‘নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি'। মা-বাবার সঙ্গে খুব বেশি হলে দাদু-ঠাকুরমাকে পায় শিশু। এখনকার যুগে বাবা-মা উভয়েই কর্মরত। তাই সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের উপর অনেকটাই দায়িত্ব বর্তায়। সন্তানের সংখ্যা একাধিক হলেও যে একটু বড়, সে নিজের কিছু কিছু দায়দায়িত্ব সামলে নিতে পারলে বাবা-মায়ের কাজ সহজ হয়। কিন্তু যেসব বাবা-মা যমজ সন্তানকে মানুষ করেন, তাঁদের কাজ অনেক বেশি কঠিন। কারণ শিশুরা দু’জনেই সমবয়সি, কেউই কারও কাজ সামলে নিতে পারবে না। তাই গর্ভাবস্থায় প্রায় দ্বিগুণ সাবধানতা নেওয়ার পরেও তাদের শৈশব ও কৈশোর জুড়ে মাবাবার শুধু সচেতনতা ও সতর্ক হওয়ার পরীক্ষাই চলতে থাকে। ধৈর্য ও মানসিক জোরের পাল্লা ভারী হলে তবেই যমজ সন্তান মানুষ করার পথ সহজ হয় অভিভাবকদের।

চ্যালেঞ্জের সাতকাহন যমজ সন্তানকে একটু একটু করে বড় হতে দেখা যতটা আনন্দের, ঠিক ততটাই ঝক্কির। একটি শিশু যেমন মা-বাবার সবটুকু মনোযোগ গ্রাস করে নেয়, এখানে সেই মনোযোগকেই ভাগ করে দিতে হয় দু’জনের মধ্যে। সন্তান মানুষের পথ তাই যমজ শিশুদের বেলায় ছত্রে ছত্রে রঙিন। প্রায় রোজই নতুন অভিজ্ঞতা। যমজ শিশুর মা-বাবাকে কিছু বিষয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।