মানুষকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিচ্ছে সম্পর্ক! ...

নিজেকে কিছু করতে হবে। নিজের পরিচয় তৈরি করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? সেটাই জানেন না অধিকাংশ। এদিকে বাবা-মা বা প্রিয়জনের নামে পরিচিত হতে চাইছেন না অনেকেই। চাইছেন অমুকের ছেলে, তমুকের মেয়ে নয়, তাঁর নামই ‘নাম' হয়ে উঠুক। ছটফটানির সঙ্গে বাড়ছে অস্তিত্ব সঙ্কট। কয়েক দশকের বাঙালি মনে উঁকি দিলেন বিশিষ্ট মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী। কথা বললেন বিশ্বজিৎ দাস।

- বিশ্বজিৎ দাস।

• অনেকের মনে ভীতি রয়েছে, মনের চিকিৎসা মানেই ওষুধ খেতে হবে! •• ঠিক এই জায়গা থেকেই আমরা কলকাতায় ১২-১৩ জন মিলে একটি সংগঠন তৈরি করি। উদ্দেশ্য একটাই, যাঁরা মনের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের কথা শোনা। সাধ্যমতো সাহায্য করা। এবং ওষুধ নির্ভর চিকিৎসার বাইরে যদি কিছু করা যায়, সেটা করা। তখন শহরে মনের সমস্যার চিকিৎসায় ‘কাউন্সেলিং' শব্দটাই চালু হয়নি।

• কাউন্সেলর ছিলেন না? .. ছিলেন। কিন্তু তাঁরা মূলত সাইকোঅ্যানালিস্টের কাজ করতেন। ধরুন, আপনি গেলেন, দিনের পর দিন মাসের পর মাস ধরে আপনার মনের বিশ্লেষণ চলছে তো চলছেই। আমাদের সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল, ৪টে সিটিং ৬টা সিটিং এইভাবে যতটা সম্ভব থেরাপি দিয়ে সমাধান করা।

• মানে আস্তে আস্তে প্র্যাকটিসের জায়গা তৈরি হল? হ্যাঁ। আসলে ইউরোপ, আমেরিকার সবাই তখন মনের বিশ্লেষণে ফ্রয়েডিও স্কুল থেকে বেরিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন অল্টারনেটিভ থেরাপি তৈরি হচ্ছে। যেমন কগনিটিভ বিহেভিওরিয়াল থেরাপি। যার উদ্দেশ্যেই হল অত অতীত না দেখে, জটিলতায় না গিয়ে যতটা দ্রুত সম্ভব সমাধান করা। রোগীর একটি সমস্যা হচ্ছে, কাজ করতে ব্যবহারগত, আচরণগত অসুবিধা হচ্ছে, তো ৬টা কী ৮টা সিটিং এর মাধ্যমে তার সলিউশন দেওয়া।

• এই যে শুরু করলেন, আপনার সরকারি চাকরির সঙ্গে ক্ল্যাশ করল না? •• একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি শুরু হল। সুবিধা অসুবিধা দুই ছিল। সদানন্দ রোডে ‘মনোবীক্ষণ' নামে আমাদের সেই সংগঠন তৈরি হল। আমি ছিলাম সেক্রেটারি। কিন্তু আমি রোগী দেখে কখনও পয়সা নিতাম না। কারণ আমি সরকারি চাকুরে, কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক, সবসময় নজরদারিতে রয়েছি। এদিকে মনোবীক্ষণে তখন ভিড় বাড়ছে। মানুষজন আসছে। নিজের অধীনে যেমন কোনও রোগীই দেখতে পারতাম না, এটা যেমন একটা সমস্যা ছিল। তবে সুবিধার দিকটা হল সরকারি চাকরির দিক থেকে তখন রেডিওতে কাজ করছি, দূরদর্শনে কাজ করছি। ঠিক করলাম, মনের সমস্যা নিয়ে প্রোগ্রাম শুরু করা যাক।