মুম্বইয়ে মা ফিরছে মাফিয়ারাজ:

ভারতীয় সিনেমার পর্দায় সেলিম খান ও জাভেদ আখতারের সৃষ্ট বিজয়ের চরিত্র ছিল এক অবিস্মরণীয় প্রভাব। সিনেমার গল্পে বিজয় কখনও পুলিস অফিসার, কখনও মাফিয়া ডন, কখনও এমন একজন যিনি তাঁর বাবার অসম্মান ভোলেনি। বাস্তবে, সেই চরিত্রগুলোর মতোই আজকের মাফিয়া গ্যাংয়ের শক্তিশালী প্রধান, লরেন্স বিষ্ণোই, ভারতীয় অপরাধ জগতের নতুন মুখ হয়ে উঠেছে। সেলিম খান যেখানে এক সময় সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা ছেলেদের মাফিয়া হতে দেখিয়েছিলেন, আজ তারই পুত্র সলমন খানকে হত্যার হুমকির মুখে দাঁড়িয়ে একটি নতুন অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে।

ভারতীয় সিনেমার পর্দায় সেলিম খান ও | তাঁর বন্ধু জাভেদ আখতার একজন বিজয়ের জন্ম দিয়েছিলেন। যে বিজয় কখনও পুলিস অফিসার। কখনও মাফিয়া ডন৷ কখনও যে বিজয়ের হাতে তাঁর বাবা সম্পর্কে অসম্মানসূচক উল্কি লিখে দেওয়া হয়েছিল— 'মেরা বাপ চোর হ্যায়'। সেই অপমান বিজয় ভোলেনি। ক্রমেই ডক-শ্রমিক থেকে সে হয়ে উঠেছিল বম্বে নামক মহানগরীর অপরাধের ভরকেন্দ্র। সেই ‘দিওয়ার’ ছবির বিজয় পড়াশোনা করেনি। আবার পিতাপুত্রের ইগোর সংঘাতে আর এক বিজয় ঢুকে পড়েছিল মাফিয়া সাম্রাজ্যের কানাগলিতে। ‘শক্তি' ছবির সেই বিজয় কিন্তু মধ্যবিত্ত শিক্ষিত যুবকের মাফিয়া হয়ে ওঠার কাহিনি বর্ণনা করেছে। এই সুপারস্টার চিত্রনাট্যকার জুটির একটি কাহিনির নামই ‘ডন’। কেন এই জুটি সুপারস্টার হয়েছিল? কারণ তাঁরা কোনও অলীক কল্পনার চরিত্রদের পর্দায় হাজির করেননি। তাঁদের সৃষ্ট মাফিয়া চরিত্রেরা বাস্তব চেনা জগৎ থেকে উঠে আসা।

সেই সেলিম খান এখন প্রতিদিন বান্দ্রা ব্যান্ডস্ট্যান্ডে মর্নিং অথবা ইভনিং ওয়াক করার পর একটি বিশেষ বেঞ্চে এসে বসেন। ২০২২ সালের ৬ জুন মর্নিং ওয়াকের পর সেই বেঞ্চে এসে বসার পর বৃদ্ধ সেলিম খান দেখলেন ফাঁকা বেঞ্চে একটি কাগজ রাখা আছে পাথর চাপা দিয়ে। তুলে নিলেন হাতে। দেখলেন, লেখা আছে, ‘মুসেওয়ালার মতোই পরিণতি অপেক্ষা করে আছে সলমন খানের! তৈরি থেক!' নীচে লেখা, এল বি এবং জি বি। এই ‘এল বি’ হল লরেন্স বিষ্ণোই। ‘জি বি' হল তার গ্রুপের গানম্যান গোল্ডি ব্রার। যাদের গ্যাং ঠিক আটদিন আগেই হত্যা করেছিল সুপারস্টার পাঞ্জাবি সিঙ্গার সিধু মুসেওয়ালাকে। সেলিম খান ঠিক যেরকম সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা ছেলেদের মাফিয়া হয়ে ওঠার কাহিনিকে হাজির করেছিলেন সাতের দশকে টানটান চিত্রনাট্যে। আজ ঠিক সেরকমই কয়েকটি সাধারণ ঘরের যুবক ক্রমেই উত্তর ভারতের সবথেকে ভয়ঙ্কর মাফিয়া গ্যাং হয়ে উঠে তাঁর সুপারস্টার পুত্র সলমন খানকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।