মিথিলার জা ন কী

এই লেখায় সীতার চরিত্রের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তাকে শুধুমাত্র একজন আদর্শ পতিপরায়ণা নারী হিসেবে নয়, একজন সাহসী, শক্তিশালী এবং আত্মবিশ্বাসী মেয়ে হিসেবে দেখানো হয়েছে। লেখক প্রাচীন রামায়ণের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সীতার আধুনিক রূপ তুলে ধরেছেন।

- রোহিণী ধর্মপাল

নাম দেখে নিশ্চয়ই ভাবছেন বিহারী কোনও মেয়ের গল্প। আবার সে মেয়ে নেপালিও হতে পারে। কারণ প্রাচীন মিথিলা রাজ্যটি বর্তমানে বিহার আর নেপালের ছোট একটি অংশ জুড়ে গড়ে ওঠা। তবে বিহার হোক বা নেপাল, গল্পটি তো কোনও এক সাধারণ মেয়ের। আসলে মানুষ তো সাধারণই হয়। আবার অসাধারণও। দুটোই। বাইরের ঐশ্বর্য দিয়ে সত্যিকারের অসাধারণ হওয়া যায় না। সোনার জ্যাকেট আর হীরের লেহেঙ্গা দিয়ে আমার বাইরেটা চোখ ধাঁধানো হতে পারে। সেই আড়ম্বর দেখে অন্য মানুষ নত হবে ভয়ে। বা কোনও মতলবে। ভালোবেসে নয়। যদিও সেই নকল ভালোবাসার কীই বা মূল্য !

নামটা অন্যরকম দেওয়াই যেত। অভিমানী জানকী, সতী জানকী, পতিপ্রাণা জানকী, অশ্রুমুখী জানকী, নতমুখী জানকী, অসূর্যম্পশ্যা জানকী—এমন কত কিছু। কিন্তু সোজাসাপ্টা নামটা দিয়ে একটা ধাক্কা দিতে চেয়েছি। শুধু এখনকার নয়। দীর্ঘ বহু যুগের মানুষকে। পুরুষদেরও। নারীদেরও। যাঁরা যুগের পর যুগ ধরে বিশ্বাস করে এসেছেন বা এখনও করেন, যে একজন আদর্শ নারী হবে মাতৃস্বরূপা। কোমল। সাত চড়ে রা কাড়বে না। স্বামী আর শ্বশুরবাড়ির সকলকে দেবতা রূপে দেখবে। কষ্ট হলে কাঁদবে। অসহায় হয়ে আশ্রয় ভিক্ষা করবে। মেয়েরা এইরকমই হবেন, এমনটা চায় আসলে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ। এইসব মানুষের জন্য বলি, নামটা ঝগড়টে জানকীও দিতে পারতাম!