ওমানের মরুতে মরূদ্যানে

ডেজার্ট ক্যামেল সাফারি, জিপ সাফারি, ডেজার্ট ট্রেকিং, স্যান্ড বাইকিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে।

- লেখা: অয়ন গঙ্গোপাধ্যায় ছবি: সুবীর কাঞ্জিলাল

বাই থেকে বাসে চললাম সংযুক্ত আর আমিরশাহির পড়শি দেশ ওমানে। ওমানের রাজধানী মাস্কাট অভিমুখে ঝড়ের গতিতে ছুটল' বাস, বিস্তীর্ণ মরু আর রুক্ষ পাহাড়ি প্রকৃতির পটভূমিকায় চার লেনের হাইওয়ে ধরে। দুবাই থেকে সরকারি বাস পরিষেবাও আছে পাশের দেশে।

মরুপ্রকৃতির দেখা মিলল দুবাই শহর ছাড়িয়ে বেশ কিছুটা গিয়ে। ধূসর প্রান্তরে ইতিউতি ছড়িয়ে কাঁটাঝোপ, খেজুর গাছ, মরুগ্রাম। কাছেদূরে ঢেউখেলানো হলুদ বালিয়াড়িতে আপনমনে চরে বেড়াচ্ছে উটের দল। এক সময় বালিয়াড়ির সীমা ছাড়িয়ে দূরে দেখা গেল শারজা শহরকে। শুরু হল রুক্ষ টিলার মিছিল। দুবাই শহর থেকে সীমান্ত জনপদ হাট্টা-র দূরত্ব ১২৫ কিলোমিটার। পাহাড়ে ঘেরা প্রাচীন ঐতিহ্যশালী গ্রাম। পর্যটকরা এখানে আসেন হাট্টা সরোবর, মসজিদ দেখতে। হাট্টা পেরিয়ে এগিয়ে চললাম সীমান্তের দিকে। চারপাশে রুক্ষ পাহাড়। তার গা দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া। দুবাই থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার সফর শেষে দুপুর দুটো নাগাদ পৌঁছলাম চেকপোস্টে। বাস সীমানা পেরিয়ে ওমানে প্রবেশ করে, আরও কিছুটা এগিয়ে ওদেশের ভূখণ্ডে অপেক্ষারত অন্য এক বাসে আমাদের তুলে দেবে। আবার একটা নতুন দেশ দর্শনের জন্য খুব আনন্দ তখন মনে। কিন্তু আমাদের সব আশায় জল ঢেলে দিল হাট্টার

অভিবাসন দপ্তর। জানা গেল, কোনও বিশেষ কারণে হঠাৎ সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সড়কপথে সীমান্ত পেরিয়ে যাতায়াত। এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত! চেকপোস্টে কাতর অনুনয়-বিনয়েও কোনও কাজ হল না। বাস ঘুরিয়ে নেওয়া হল। হাট্টা গঞ্জে এসে, নানা জায়গায় ফোন করে খবরাখবর নিয়ে ঠিক করা হল, আল ইন চেকপোস্ট দিয়ে আর-একবার সীমান্ত পেরনোর চেষ্টা করা হবে।

হাট্টা থেকে ঘণ্টা তিনেক লাগল আল ইন যেতে। সেখানেও বিফল হলাম। এদিকে রাত হতে চলল। মরুর বুকে ঠান্ডা পড়া শুরু হল। স্থানীয় ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে ফোনে কথা বললাম। স্থির হল, এখান থেকে বাসে আবুধাবি বিমানবন্দরে পৌঁছে, কোনও একটা হোটেলে রাতটা কাটিয়ে পরদিনের বিমানে উড়ে যাব মাস্কাট। কথামতো সব ব্যবস্থাই হয়ে গেল। আল ইন থেকে বাস রওনা হল আবুধাবির দিকে।

মাঝপথে একটা ধাবায় ডিনার সেরে নিলাম। রাত একটায় পৌঁছলাম বিমানবন্দর লাগোয়া হোটেলে। সারাদিনের চূড়ান্ত শারীরিক ও মানসিক ধকলে বিধ্বস্ত শরীর এলিয়ে দিলাম বিছানায়।