শুরুতেই ১৩৫৬ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত সংস্কৃতি-চিন্তা বিষয়ক একটি প্রবন্ধের অংশবিশেষের প্রতি চোখ রাখা যাক। প্রবন্ধকার ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। গভীর মননশীল প্রবন্ধকার হিসেবে নতুন করে ধূর্জটিপ্রসাদের পরিচয়ের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। এদেশের, বিশেষ করে বাংলা সংস্কৃতির প্রতি তাঁর উপলব্ধি ও প্রত্যয় থেকে যে বৈদগ্ধ্যের পরিচয় পাওয়া যায় সেখানে আলোচ্য অংশটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি লিখেছেন, একটি মাত্র মেয়ের গান ভালো লাগল। সুচিত্রা মুখার্জি চারখানা গান গেয়েছিল, তার মধ্যে একটি, “সার্থক জনম আমার” সত্যই ভালো হয়েছিল।' শুরুতেই ‘একটি মাত্র মেয়ের' কথা লিখে বুঝিয়েছিলেন অনেকের মধ্যে থেকে যে সে আলাদা, যা কিনা তিনি উহ্য রেখেছেন ওই শব্দবন্ধের মাধ্যমে। এরপর, কেন ভাল লেগেছে সেই বিশ্লেষণে লিখলেন, 'মেয়েটির গলায় জোর আছে, টপ্পার দানা আছে, আর ভাবও আছে, এবং প্রত্যেকটারই সংযত ব্যবহার করতে সে জানে।' আবারও ‘সংযত ব্যবহার করতে সে জানে' কথাটি মহামূল্যবান। এইটুকু লেখার মধ্যেই ধূর্জটিপ্রসাদ খুব পরিষ্কার করে সুচিত্রা মুখার্জি (বিয়ের পরে মিত্র হয়েছিলেন)-র রবীন্দ্রগানের গায়কি সম্পর্কে যা বলার যেন বলে দিয়েছিলেন। কিন্তু এই গায়কি অর্জন তো আর হঠাৎ করে পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা নয়, কীভাবে সুচিত্রা এমন গায়কির অধিকারী হলেন? তার উত্তরেও ধূর্জটিপ্রসাদের ছুঁয়ে যাওয়া ব্যাখ্যাটি ছিল এমন—‘শুনলাম মেয়েটি কমিউনিস্ট। কমিউনিজমে দেশে সাহিত্যের উন্নতি ঘটেছে কি না জানি না তবে ঐ মেয়েটির গলার কোনো ক্ষতি হয়নি।' একটু ব্যঙ্গ করে হলেও কিন্তু কথাটির মধ্যে স্পষ্টতার ছাপ আছে।
যদিও সুচিত্রার গায়কির আরও উন্নতির আশায় বলেছেন—‘বছর পাঁচেক প্রাণপণে ভালো লোকের কাছে শিখলে এ মেয়ে রীতিমত গায়িকা হবে, যদি ইতিমধ্যে গৃহিণী না হয়। কিন্তু গোখরোর সলুই এ-দেশে ঢোঁড়া-ঢ্যামনা হয়ে যায়। কথা আমার নয়, রবীন্দ্রনাথের।'
ধূর্জটিপ্রসাদের এই আশার ভবিষ্যৎটি শেষপর্যন্ত কী হয়েছিল তা আজ আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে 'যদি ইতিমধ্যে গৃহিণী না হয়' এমন আশঙ্কা এর আগে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও তাঁর প্রিয় দু'-একজন গায়িকা সম্পর্কেও করেছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে সে ইতিহাসও জেনে রাখা ভাল।
This story is from the September 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the September 17, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।