কমসূত্রে বহুদিন সুইডেন নিবাসী হওয়ায় ইউরোপে ধেই ধেই করে ঘুরে বেড়ানোর একটা অলিখিত ছাড়পত্র পাওয়া গেছে। তাই ঘষটে যাওয়া প্রেশার কুকার, ম্যাড়মেড়ে ভাতের হাঁড়ি আর অফিসের ল্যাপটপ সরিয়ে রেখে মাঝে মধ্যেই বেরিয়ে পড়ি। এবারের বেড়ানোর প্ল্যান করতে নেমেই বুঝলাম দিন পনেরোর কমে দাঁড়াচ্ছে না। অথচ ঠিক এই সময়েই ইউরোপে সাঙ্ঘাতিক একটা মুদ্রাস্ফীতির ঢেউ উঠেছে। দোকানে বাজারে আগুন লেগেছে। ইতালির ভেতরে নিজে ড্রাইভ করে ঘোরার প্ল্যানও আপাতত পকেটের কব্জায় নেই। সবাই মিলে ছ'জন। একটা বড় গাড়ি নিতে হলে এখন প্রায় ডবল খরচ পড়ছে। অগত্যা ঠিক করলাম বাসে আর ট্রেনেই ঘুরব। আর এগারো নম্বর তো আছেই।
ইতালি বেশ লম্বা একটা দেশ। তার মাথার দিকে অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, আর তার পা ধুয়ে দিচ্ছে ভূমধ্যসাগর। ঠিক এই কারণেই দক্ষিণ ইতালির জীবনযাত্রা-সংস্কৃতি, উত্তর ইতালির থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ এখানে এসেছেন। বাসা বেঁধেছেন। তাঁদের স্পর্শে ইতালির এই অংশ আরও বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে। আমাকে প্রথমেই যেটা করতে হল সেটা হল গন্তব্য বেছে নিয়ে এয়ার বি এন বি-র ব্যবস্থা করা। দলটা বড় বলেই বাজেটের মধ্যে হোটেল পাওয়া মুশকিল। ইউরোপের যেখানেই গেছি সেখানে আগে থাকতে এই ব্যাপারটা আমাকে বেশ ভাবিয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপিয়ান সামার রীতিমত একটা উৎসব। এই সময় এখানকার মানুষরা পকেট খোলা রেখে বেরিয়ে পড়েন। পুরো একমাস ছুটি। স্কুল কলেজ অফিস সব বন্ধ করে বড় বড় গাড়ি নিয়ে হই হই করতে করতে বেরিয়ে যায় গোটা পরিবার। এইসব গাড়িকে বলে ক্যারাভান। এর ভেতরে শোয়া, খাওয়া, থাকা এবং আরও কিছু। আমাদের এখান থেকে জার্মানি হয়ে তিনটে ট্রেন পালটে ইতালি যাওয়া যায় বটে, কিন্তু সেটা সময় আর ব্যয় সাপেক্ষ। ইউরোপে অধিকাংশ সময়ই ট্রেনের থেকে প্লেনে যাতায়াত সস্তা। আমাদের এখানে সবচেয়ে কাছের এয়ারপোর্ট ডেনমার্ক। ঠিক হল, এখান থেকে রোম, রোম থেকে বারি; বাড়ি নয়, জায়গাটার নামই বারি। বারি থেকে যাব মাতেরা। মাতেরা অত্যন্ত একটা বিখ্যাত জায়গা। কেন, সেই গল্পে আসছি পরে। মাতেরা থেকে যাব অ্যামালফি কোস্ট তারপর সেখান থেকে নেপলস হয়ে ট্রেনে চলে যাব ভেনিস। এই সব মাথার মধ্যে ঘুরছে। হঠাৎ বউ জিজ্ঞেস করল, কী গো প্রেশার কুকার নেব?
This story is from the October 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the October 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।