তিনমাথা মোড়ের কাছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল সোমনাথ, মুখে আকাশ-রঙা সার্জিকাল মাস্ক। রাস্তায় মানে অটোর লাইনে। লাইন অবশ্য বেশি নয়। আজ রোববার বলে অফিসে যাওয়ার লোকজন নেই। না হলে তো বিরাট লাইন পড়ে যায় অন্যান্য দিন। সোমনাথ অবশ্য অটোর লাইনে আসে না। তার হল মেট্রো লাইন। একবার চাপলে ঠিক চব্বিশ মিনিট লাগে। তার পর দশ মিনিট পা চালালেই অফিস।
আজ ছুটির দিনে সে বেরিয়েছে বাজার করতে। মানে সব্জি বাজার, মাছ-মাংস এই সব। হয়েও গেছে কেনাকাটা। ওর হাতে ঝুলছে ভারী বাজারের ব্যাগ, ব্যাগের কানা দিয়ে উঁকি মারছে লাল কচু শাকের ডাঁটা। ইলিশ মাছ পেয়ে গেল বর্ষার শুরুতেই। তেমন বড় নয়, সাতশো আটশোর মতো। অবশ্য বড় পেলেই সে যে কিনত তা নয়। অত খরচ করার সামর্থ্য তার নেই। ওজন এক কিলো বা তার বেশি হলেই ইলিশ মাছের দামটা একটু লাফ দিয়ে ওপরে উঠে যায়। আর বড় মাছ কিনেই-বা কী হবে। খাওয়ার লোক তো মাত্র দু'জন। ও আর সৃজলা। তার চেয়ে এই ভাল। সৃজলাকে আজ ইলিশের মাথা দিয়ে কচুর শাকটা করতে বলবে। সঙ্গে চিকেন কারি। বাকি মাছটুকু থাকবে পরের দিনের জন্য।
এখন সোমনাথ যাচ্ছে যাদবপুরে। ওখানে একটা দোকানে প্রেশার কুকারটা সারাতে দিয়েছিল ক'দিন আগে। সিটি ঠিকমতো বাজছিল না। ভেপারও বেরিয়ে যাচ্ছিল কোনা থেকে। হাতে ভারী সব্জির ব্যাগ, মাছের ব্যাগ নিয়ে অসুবিধেই হচ্ছিল ওর। বাজার করার আগে কুকারটা নিয়ে এলেই ভাল হত হয়তো। কিন্তু কী করবে! দোকানটা যে সাড়ে দশটার আগে খোলেই না।
এটা ভাবতে ভাবতেই লাইন এগিয়ে অটোর একদম কাছে। সোমনাথের আগে একটা মোটাসোটা লোক, সে প্রথমে ঢুকে সাইডে ডান দিকে বসল। সোমনাথকে মাঝখানেই বসতে হবে। এই মাঝখানের সিটটা ওর বেজায় অপছন্দের। মুখ ব্যাজার করে ঢুকে বসতেই তার বাঁ দিকে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে, এরকম চেহারার একটা আদিবাসী বৌ উঠে বসল। তার কোলে একটা বাচ্চা। মোটা লোকটা দরদর করে ঘামছে। তার পরনের ময়লা জামা থেকে বের হচ্ছে বাসি ঘামের গন্ধ। খুব বিরক্তি নিয়ে সোমনাথ অন্য দিকে মুখ ফেরায়। দেখে, বাচ্চাটা চোখ গোল গোল করে তাকে দেখছে।
This story is from the October 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber ? Sign In
This story is from the October 02, 2024 edition of Desh.
Start your 7-day Magzter GOLD free trial to access thousands of curated premium stories, and 9,000+ magazines and newspapers.
Already a subscriber? Sign In
ভূতের বাড়ি
প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প থেকে কিছু মানুষ যদি বরাদ্দ অর্থের বড় অংশ নিজেদের ভাগে আনতে পারেন, তা হলেও সেটা প্রচুর।
চার দশকের মেট্রো
কলকাতায় মেট্রো রেলের চার দশক পূর্তি এই শহরের গতিবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য এক মাইলস্টোন।
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভারত
ঘরের মাঠে এমন পর্যুদস্ত হওয়া নতুন হলেও প্রত্যাশা থাকুক, আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ভারতীয় দল।
ফিরলেন ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফিরছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। তাঁর \"আমেরিকা ফার্স্ট\" নীতি আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভারত, চিন ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আনবে তাঁর নতুন প্রশাসন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দর্পণে প্রতিবিম্বিত তাসের ঘর
ওয়াশিংটন ডিসি প্রেক্ষাপটে নির্মিত রাজনৈতিক থ্রিলার \"হাউস অফ কার্ডস\"। ফ্র্যাঙ্ক আন্ডারউড ও তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্ত্রী ক্লেয়ারের ক্ষমতার লড়াইয়ের গল্প, যেখানে ক্লেয়ার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হন।
মেরুকৃত এক সমাজের নির্বাচন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরুত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিফলন। কমলা হ্যারিসের পরাজয় ও ট্রাম্পের জয় গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সমাজের মূল প্রশ্নগুলো নিয়ে নাগরিকদের হতাশা প্রকাশ করে।
বহুরূপী কৃত্তিকা
হেমন্ত আর শীতের সন্ধ্যায় মাথার ওপর কৃত্তিকাকে দেখায় উজ্জ্বল প্রশ্নচিহ্নের মতো। তাকে ঘিরে প্রশ্নও কম নেই।
দিগন্তের আলো
মাদল কুহকের অদ্ভুত টানাপোড়েনের গল্পের প্রতিটি ভাঁজে কেবল একটাই প্রশ্ন লুকিয়ে থাকে—কুহক কি কখনও তাকে ডেকেছিল? জীবনের আলো-ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে, মাদল সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বারবার হারিয়ে ফেলে নিজের পথ। তবু ভিড়ের মাঝে, তার পিছু হেঁটে, কমলা আঁচলের টানে, কুহকের উপস্থিতি যেন বারবার তাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
অসমাপ্ত গল্পের পাতা
একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: \"করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে ভোরের মিষ্টি রোদ আড়মোড়া ভাঙছে, চায়ের ধোঁয়া আর পায়রার ঝাঁক জীবনের সাদামাটা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে। ব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতি ও স্মৃতির মিশেলে উঠে আসে এক টুকরো রোমাঞ্চকর অনুভূতি।\"
চৈতি-ঝরা বেলায়
মুহূর্তের ছোট্ট বিবরণ ডোরবেলের দিকে হাত বাড়িয়ে রুহানি হঠাৎ থমকে গেল। দরজার কাছে রাখা একজোড়া মহিলা জুতো দেখে তার মনের ভেতরে কিছু ভাবনা খেলে গেল। সুইচ থেকে আঙুল সরিয়ে নেওয়ার পরও বেলটা বেজে উঠল। মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন, \"কী রে, এত হাঁপাচ্ছিস কেন?\" রুহানি ঢুকেই ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে জানতে চাইল, \"কে এসেছে মা?\" মা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললেন, \"ফ্রেশ হয়ে নে, খেতে দিচ্ছি।\" মনে হচ্ছে, স্মৃতিকণা কিছু লুকোচ্ছে। মনের ঝড় থামাতে রুহানি একা একা মায়ের ঘরে ঢুকে। ততক্ষণে ব্যালকনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে আর তার পুরনো দিনের কথাগুলো মিলে এক নতুন গল্প গড়ে তুলতে শুরু করেছে।